হ্যালো পাঠকবর্গ ভালো আছেন সবাই। রাইস কুকার ব্যবহার করে নাই এমন পাঠকবর্গ খুজে পাওয়া খুবই মুশকিল। কম বেশি সবাই রাইস কুকারে ভাত রান্না বা খিচুড়ি রান্না করে খেয়েছি। কিন্তু এটা জানিনা কিভাবে এই যন্ত্রটি খুব তাড়াতাড়ি ভাত রান্না করে দেয়। তাই আজকে আমরা জানবো কিভাবে এই যন্ত্রটি কাজ করে।
যা যা থাকছে আজকের আলোচনায়_
ভূমিকা
রাইস কুকারের প্রধান অংশ
রাইস কুকারের কার্যপ্রণালী
রাইস কুকারের বিভিন্ন অংশের কার্যপ্রণালী
আরো জানুন>ট্রান্সফরমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ভূমিকাঃ
রাইস কুকারে অতি দ্রুততম সময়ে ভাত রান্না করা যায়। আমাদের ন্যায় উন্নয়নশীল দেশে রাইস কুকারের ব্যবহার কম হলেও উন্নত দেশসমূহে রাইস কুকার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। যে সকল দেশে বাসাবাড়িতে কাজের লোক পাওয়া দুষ্কর সে সকল দেশে রাইস কুকার খুবই প্রয়োজনীয় একটা অ্যাপ্লায়েন্স। এটা বিভিন্ন সাইজের ও বিভিন্ন ওয়াটের হয়ে থাকে। এতে শুধুমাত্র ভাত রান্নাই করা হয় না রান্নার পর অনেক লম্বা সময় রান্না করা ভাত গরমও রাখা যায়। বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্রান্ডের রাইস কুকার বাজারে পাওয়া যায়।
রাইস কুকারের বিভিন্ন অংশঃ
একটি রাইস কুকার নিচের অংশ নিয়ে গঠিত,
- প্রধান বডি (Main Body)
- আউটার লিড (Outer lid)
- ইনার পট (Inner pot)
- স্টিম ট্রে (Steam tray)
- হিটিং প্লেট (Heating plate)
- মেজারিং কাপ (Measuring cup)
- ম্যাগনেটিক সুইচ (Magnetic switch)
- কন্ট্রোল প্যানেল (Control panel)
- রাইস কুক ল্যাম্প (Rice cook lamp)
- কিপ ওয়ার্ম (Keep warm lamp)
- রাইস স্কুপ (Rice scoop)
- ইনার লিড (Inner lid)
- স্কুপ হোল্ডার (Scoop holder)
- সাপ্লাই কর্ড (Supply cord)
- ডিউ কালেক্টর (Dew collector)
- স্টিম হোল, হ্যান্ডেল ইত্যাদি।
রাইস কুকারের কার্যপ্রণালীঃ
রাইস কুকারের মূল অংশ একটি স্টিলের পাত্র, যার ভিতরের দিকে পাউডার কোটিং করা থাকে। এ পাত্রের উপরের দিকের স্টিলের ঢাকনা আছে। মূলত রাইস কুকার প্রেসার কুকারের মতোই উচ্চ গরম বাস্পের তাপে ও চাপে ভাত রান্না করে থাকে। রাইস কুকারের বহিরাবরণের ভিতরের অংশে একটি অভ্যন্তরীণ পাত্র আছে, যার মধ্যে রান্নার চাউল ও পানি পরিমাপ অনুযায়ী রাখতে হয়। রাখার আগে এ চাউল ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। স্টিমিং ট্রে টি চাউলের উপর ইনার পটের মুখে রাখতে হয়। স্টিমিং ট্রে বা ইনার লিডের উপরে চাউল রাখা যাবেনা। রাইস কুকারের মূল বহিরাবরণের নিচের অংশে হিটিং প্লেট থাকে। ইনার পাত্রটি এ হিটিং প্লেটকে যেন স্পর্শ করে থাকে, তা লক্ষ করতে হবে। পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে সুইচ অন করলে কুকিং ইন্ডিকেটর ল্যাম্প জ্বলে উঠবে ও রাইস কুকিং শুরু হবে। রাইস কুকিং সম্পন্ন হলে “কুক” পজিশন বন্ধ হবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে “ওয়ার্ম” পজিশন শুরু হয়ে যাবে। সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে কুলিং ক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে ওয়ার্ম পজিশন শুরু হয়। এ সময় ঢাকনা খুলে অতিরিক্ত বাষ্প বের করে দিতে হয়, তা না হলে ভাত আঠালো হয়ে পড়বে। ওয়ার্ম পজিশন অর্থাৎ গরম অবস্থানে ভাত ২ ঘণ্টা থেকে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত গরম থাকে। সাপ্লাই প্লাগ খুলে “ওয়ার্ম” পজিশন বন্ধ করা যায়। যদি কন্ট্রোল বাটন কোন কারণে পুশ করানো হয়, তবে “কুক” পজিশন লাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এবং ওয়ার্ম পজিশন লাইট অন হবে। প্রতিবার রাইস কুকিং করার পর ইনার লিড ইনার পট, স্টিম ট্রে এবং ডিউ কালেক্টর বা বাষ্প সংগ্রাহককে পরিষ্কার করতে হয়। রাইস কুকারের হিটিং প্লেটটি “হট প্লেট” এর মতোই দেখতে এবং ভিতরে পেচানো পাইপের মধ্যে হিটিং এলিমেন্ট থাকে।
বিভিন্ন অংশের কার্যপ্রণালীঃ
- প্রধান বডিঃ এটি হল রাইস কুকারের প্রধান বহিরাবরণ। এটি ধাতব পদার্থের তৈরি যেমন অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল ইত্যাদি। এ বহিরাবরণ এর ভিতরে ইনারপট, স্টিম ট্রে ইত্যাদি থাকে।
- আউটার লিডঃ এটি রাইস কুকারের ঢাকনা। এটিও ধাতব পদার্থের তৈরি।
- ইনার পটঃ এটি রাইস কুকারের অভ্যন্তরীণ পাত্র। ইনার পটে অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি নন স্টিক কোটিং করা থাকে, যাতে রন্ধনকৃত ভাত পাত্রের দেয়ালে লেগে না যায়। এই পাত্রের তলদেশ সমতল থাকে।
- স্টিম ট্রেঃ পাতলা জালিপূর্ণ গোলাকৃতি বা চাকতির আকারে ধাতব পদার্থের তৈরি পাত্র। এ পাত্রটি ইনার পটের উপর রাখা হয় অর্থাৎ ইনার পটের মধ্যে রক্ষিত পানি মিশ্রিত চাউলের উপরে এটি অবস্থান করে।
- হিটিং প্লেটঃ এটি রাইস কুকারের প্রধান হিটিং এলিমেন্ট, দেখতে হট প্লেটের মতোই এবং গোলাকৃতি স্টিলের আবরণে আচ্ছাদিত থাকে। এর ভিতরে পেচানো ধাতব নলের ভিতরে নাইক্রোম তারের তৈরি স্পাইরাল আকৃতির হিটিং এলিমেন্ট আছে।
- মেজারিং কাপঃ অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় পদার্থের তৈরি পরিমাপক কাপ। এর যাহায্যে রান্নার জন্য চাউল ও পানি পরিমাপ করে দেয়া হয়। এর গায়ে পরিমাপক দাগকাটা থাকে।
- ম্যাগনেটিক সুইচঃ এ সুইচ, হিটিং এলিমেন্টের সাথে সংযুক্ত থাকে। ইস্ত্রির থার্মোস্ট্যাটের মতোই এটা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কাজ করে থাকে। পানির বয়েলিং টেম্পারেচার ১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থার্মোস্ট্যাট কন্টাক্ট ওপেন থাকে।
- কন্ট্রোল প্যানেলঃ রাইস কুকারের প্রধান অংশ বডির নিম্ন দিকে একপার্শ্বে কন্ট্রোল প্যানেল চেম্বার থাকে। এর মধ্যে সুইচ, কুক ল্যাম্প, কিপ ওয়ার্ম ল্যাম্প, সাপ্লাই টার্মিনাল ইত্যাদি থাকে।
- রাইস কুক ল্যাম্পঃ রাইস কুকারে সাপ্লাই কর্ড সংযোগের পর কন্ট্রোল প্যানেল কন্ট্রোল বোতাম পুশ করলে রাইস কুক ল্যাম্প জ্বলবে অর্থাৎ কুকিং কার্যক্রম আরম্ভ হবে।
- কিপ ওয়ার্ম সুইচঃ রাইস কুকিং কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর রাইস কুক ল্যাম্প বন্ধ হয়ে যাবে এবং এর পরই কিপ ওয়ার্ম ল্যাম্প জ্বলবে অর্থাৎ কিপ ওয়ার্ম কার্যক্রম শুরু হবে।
- সাপ্লাই কর্ডঃ রাইস কুকারে সাপ্লাই দেয়ার জন্য ব্যবহৃত সাপ্লাই কর্ড হিটিং এলিমেন্ট সাপ্লাই দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।
আজকে এই পর্যন্তই। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।